ক্লোনিং পদ্ধতি ও ইসলাম

জনৈক ব্যক্তি ক্লোনিং পদ্ধতি সম্বন্ধে ইসলামের দৃষ্টি ভংগী জানতে চেয়েছিলেন। আজ এ সম্বন্ধে কিছুটা আলোচনা করতে চেষ্টা করব ইনশাল্লাহ। প্রথমেই ক্লোনিং পদ্ধতির স্বরুপ নিয়ে আলোচনা করি।

স্বরুপঃ অনেকেই এ সম্বন্ধে জানেন তারপরেও এ সম্বন্ধে যারা জানেন না তাদের জন্য কিছুটা আলোচনা করা যাক। ক্লোনিং হচ্ছে পুরুষ ও নারীর দৈহিক মিলন ব্যতিত সম্পূর্ণ ভিন্ন সিস্টেমে সন্তান উৎপন্ন করার একটা আধুনিক সিস্টেম । সেটা হল- কোন মানুষের দেহ থেকে কোষ নিয়ে ল্যাবে পরীক্ষা নীরিক্ষা করার পর তা কোন মহিলার গর্ভে রাখার নির্দিষ্ট সময় পর মহিলা বাচ্চা প্রসব করবে। এতে পুরুষ নারীর দৈহিক মিলনের প্রয়োজন নেই। এর কয়েকটি পদ্ধতি রয়েছে।
১। এক মহিলার শরীর থেকে কোষ নিয়ে অন্য মহিলার গর্ভে রাখা।
২। কোন মহিলার নিজের শরীর থেকে কোষ নিয়ে তার গর্ভে রাখা। এখানে অন্য পুরুষ তো দুরের কথা অন্য কোন মহিলার ও দরকার হচ্ছে না।
৩। অন্য কোন পুরুষের শরীর থেকে কোষ নিয়ে মহিলার গর্ভে স্থাপন।
৪। স্বামীর শরীর থেকে কোষ নিয়ে স্ত্রীর গর্ভে স্থাপন।

ক্লোনিং-এর ইতিহাসঃ ১৯৯৭ সালের ২৩শে ফেব্রুয়ারী সারা বিশ্বকে কাপিয়ে তুলল একটি ঘটনা। সেটা হচ্ছে স্কটল্যান্ডে ক্লোনিং এ বিজ্ঞানীদের সফলতা। তারা একটা ভেড়ীর স্তন থেকে কোষ নিয়ে ছয়দিন পর্যন্ত ল্যাবে পরীক্ষা নীরিক্ষা চালিয়ে আরেকটি ভেড়ীর গর্ভে স্থাপন করার পর গর্ভের মেয়াদ শেষে উক্ত ভেড়ী বাচ্চা জন্ম দেয় যার নাম দেয়া হয় "ডলি"। এরপর বিভিন্ন সময় ইদুর,গরু, খরগোশ ও অন্যান্য প্রাণির ক্লোনিং এর উপর সফল পরীক্ষা চালানো হয়। অনুরুপ ভাবে ২০০২ সালের জানুয়ারীতে একটি বিড়ালের জন্ম হয়।
একটি সুত্র থেকে জানা যায়, ২৭০ বার পরীক্ষা চালানোর পর বিজ্ঞানীরা "ডলি"র জন্মের মাধ্যমে তাদের সফলতার মুখ দেখেন। এ ছাড়াও ২০০৩ সালের ২৬শে জানুয়ারী বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় আমেরিকার বাইরে কোন এক অজ্ঞাত স্থানে বিশ্বের প্রথম ক্লোনিং মানব শিশুর জন্ম হয়।তার নাম দেয়া হয় "হাওয়া" তবে, স্থানটার নাম প্রকাশ করা হয় নি। ক্লোনিং মানব শিশুর জন্য বিজ্ঞানীরা ১০ বার পরীক্ষা চালিয়ে সফলতার মুখ দেখেন।

ক্লোনিং সন্তানের বৈশিষ্ট্যঃ ক্লোনিং সিস্টেমে জন্ম নেয়া শিশুর মধ্যে কয়েকটি বৈশিষ্ট্য লক্ষনীয়।
১। পুরুষের থেকে কোষ নিলে সন্তান অবশ্যই পুরুষ হবে। এবং নারীর শরীর থেকে কোষ নিলে সন্তান নারী হবে।
২। সন্তানের চেহারা সুরত ও বংশগত অন্যান্য গুণাবলীতে যার থেকে কোষ নেয়া হয়েছে পুরোপুরি তার মত হবে। সে যেন উক্ত ব্যক্তির অবিকল ফটোকপি।

এবার আসুন! আমরা দেখে নিই ইসলাম এগুলো সম্বন্ধে কি বলে?
ইসলামের বিধান সর্বকালের জন্য অত্যন্ত সময়োপযোগী। কুরআন ও হাদীসে বিশেষ বিশেষ বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে। বিশেষ করে যে বিষয়গুলো কুরআন নাযিলের সমসাময়িক যুগে বর্তমান ছিল তার সমাধান দিয়েছে বা ভবিষ্যৎবাণী দিয়ে তার সমাধান দেয়া হয়েছে বা যেগুলো পরবর্তীতে হবে তার সমাধানের জন্য কিছু কিছু সূত্র দিয়ে দিয়েছে যার মাধ্যমে সর্বদা যে কোন বিষয়ের সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নেয়া খুবই সহজ হয়। সুত্র দ্বারা বিচার করলে সর্বদা কোন কিছুর লেটেস্ট সমাধান পাওয়া যায়। ফলে, প্রাচীন যুগের জন্য এটা প্রযোজ্য ছিল এখন আর নেই এটা বলার কোন উপায় থাকে না।

প্রথম পদ্ধতিঃ এক মহিলার গর্ভ থেকে কোষ নিয়ে অপর মহিলার গর্ভে সন্তান উৎপাদন বৈধ হবে না ।
দলীলঃ
১। ইসলামী শরীয়ত সম্মত পন্থায় বিভিন্ন শর্ত ও যথাযথ নিয়ম সাপেক্ষে বিবাহের মাধ্যমে স্বামী-স্ত্রীর সংসার করার মাধ্যমে সন্তান হওয়া উচিত। আল্লাহ বলেনঃ يَا أَيُّهَا النَّاسُ اتَّقُوا رَبَّكُمُ الَّذِي خَلَقَكُمْ مِنْ نَفْسٍ وَاحِدَةٍ وَخَلَقَ مِنْهَا زَوْجَهَا وَبَثَّ مِنْهُمَا رِجَالًا كَثِيرًا وَنِسَاءً
অর্থাৎ, হে মানব সম্প্রদায়! তোমরা আল্লাহ তায়ালাকে ভয় কর যিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন একটি মাত্র প্রাণ থেকে। আর তার থেকে সৃষ্টি করেছেন তার জোড়া। আর তাদের দু'জনের মাধ্যমে অনেক পুরুষ ও নারীর প্রসার ঘটিয়েছেন। (সুরা নিসাঃ ১)
* وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا رُسُلًا مِنْ قَبْلِكَ وَجَعَلْنَا لَهُمْ أَزْوَاجًا وَذُرِّيَّةً
অর্থাৎ, আমি আপনার পূর্বে অনেক রাসুল পাঠিয়েছি আর তাদের জন্য জোড়া ও বংশ সৃষ্টি করেছি। (সুরা রা'দঃ ৩৮)
* وَاللَّهُ جَعَلَ لَكُمْ مِنْ أَنْفُسِكُمْ أَزْوَاجًا وَجَعَلَ لَكُمْ مِنْ أَزْوَاجِكُمْ بَنِينَ وَحَفَدَةً অর্থাৎ, আল্লাহ তোমাদের জন্যে তোমাদেরই শ্রেণী থেকে জোড়া পয়দা করেছেন। এবং তোমাদের যুগল থেকে তোমাদেরকে পূত্র ও পৌত্রাদি দান করেছেন। (সুরা নাহলঃ ৭২)

ক্লোনিং পদ্ধতিটা বৈবাহিক সম্পর্কের আওতায় হয় না। উপরোক্ত (১ নং পদ্ধতিতে) দুই মহিলার কেহই অপরের স্বামী হতে পারে না। আর দুই মহিলার ভিতরকার বিবাহ ও দৈহিক সম্পর্ক অত্যন্ত গর্হিত কাজ।
২। দুই মহিলার মধ্যকার দৈহিক সম্পর্ক আরবীতে যাকে বলে "সিহাক" হারাম। অধিকাংশ ওলামায়ে কেরামের মতে তা হারাম। আবু দাউদ শরীফে এর নিষিদ্ধতা সম্বন্ধে একটি হাদীস এসেছে। এছাড়াও "ইশারাতুন নাস" তথা কুরআন হাদীসের ইংগিত দ্বারা এটার নিষিদ্ধতা প্রমাণিত হয়েছে।
৩। সব মানুষের চাই সে পুরুষ হোক বা মহিলা কিছু চাহিদা আছে তন্মধ্যে জৈবিক চাহিদা অন্যতম যে চাহিদা মেটানো তার জন্য প্রয়োজনীয় বিষয়। সেটা বিবাহের মাধ্যমে হালাল পন্থায় বা বিবাহ বহির্ভূত অবৈধ পন্থায় হতে পারে। এ জন্য আমরা দেখি ইসলাম বৈরাগ্যতাকে হারাম করেছে। আল্লাহ তায়ালা উন্নত ও সুন্দর পন্থায় বিবাহের মাধ্যমে এ চাহিদা মেটানোর ব্যবস্থা রেখেছেন। মহিলা প্রাকৃতিক সিস্টেম ছাড়া ক্লোনিং এর মাধ্যমে সন্তান নিলে তার উল্লেখিত গুরুত্বপূর্ণ চাহিদাটি পুরণ হল না। তার স্বামী থাকলে বৈবাহিক বন্ধনের মাধ্যমে সন্তান হত। এটা সমাজে বিবাহের পথ রুদ্ধ করে দিতে পারে। যদি এটা এভাবে চলতে দেয়া হয় তাহলে সমাজে তা রেওয়াযে পরিণত হয়ে যেতে পারে। যা সমাজের পারিবারিক ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার কারণ হতে পারে। তাই, সে পথটা বন্ধ করে দিতে হবে। ইসলামী শরীয়তের একটা গুরুত্বপূর্ণ সূত্র বা কায়েদা হচ্ছে- "যদি কোন কাজ অন্য কোন খারাপের দিকে টেনে নিয়ে যায় তাহলে তাও বৈধ হবে না"। এ সূত্র অনুযায়ী ক্লোনিং সিস্টেম ও বৈধ নয়।
৪। এ সিস্টেমে জন্ম নিবে কন্যা সন্তান, যার কোন পিতা নেই। এ শিশু এমনভাবে বেড়ে উঠবে যার কোন পিতা নেই । এটা তার জন্য মনোকষ্টের কারণ হবে। ইসলাম যেকোন ধরণের কষ্ট ও অনিষ্টতাকে নিষিদ্ধ করেছে। আমাদের সমাজে আমরা অহরহ দেখে থাকি যে, যারা এতিম অবস্থায় দুনিয়ায় আসে বা যাদের ছোট বয়সে পিতামাতা মারা যায় তারা অধিকাংশ ক্ষেত্রে মনে মনে অত্যন্ত কষ্ট পেয়ে থাকে। তেমনিভাবে যাদেরকে মানুষ কুড়িয়ে পায় তাদেরও একই অবস্থা। শিশুরা যে সমস্ত কারণে মনোকষ্ট পায় তন্মধ্যে রয়েছে মানসিক ও শারিরীক কষ্ট। মানসিক কষ্টের মধ্যে রয়েছে যেমন পিতামাতার মধ্যকার শুধুমাত্র কোন একজনের সাথে থাকা হোক তাদের একজন মারা যাওয়ার কারণে বা তালাক দেয়ার কারণে ইত্যাদি।
ক্লোনিং সিস্টেমে জন্ম নেয়া শিশুও তেমনি সমাজের অন্যান্য সাধারণ মেয়ের মত থাকতে পারে না। সে এমন ভাবে সমাজে বেড়ে ওঠে যার কোন পিতা,চাচা,দাদা কেউ নেই। এ ধরণের মেয়ের বিবাহের সময় কেউ এগিয়ে আসবে না। এমন যুবক কে আছে যে পিতা-চাচা বিহীন এমন মেয়েকে বিবাহ করতে এগিয়ে আসবে? এর বিবাহ হলে তার সন্তানদের নানা থাকবে না। এছাড়াও প্রচুর সমস্যার সন্মুখীন হতে হয়।
৫।রাসুল (সাঃ) বলেছেনঃ دَعْ مَا يَرِيبُكَ إِلَى مَا لَا يَرِيبُكَ অর্থাৎ, যা সন্দেহ সৃষ্টি করে তা ছেড়ে দিয়ে যা সন্দেহ সৃষ্টি করে না তার দিকে যাও।(বুখারী,তিরমীজী,আহমদ)

বিজ্ঞানীরা এভাবে সন্তান সুস্থ হয়ে জন্মাবে কিনা তা বলেন নি। এমনও হতে পারে যে, সন্তানের শারিরীক ত্রুটি নিয়ে জন্ম হবে। গৃহীত কোষের বয়সানুপাতে তার বয়স কম হতে পারে। কিংবা, সন্তানের অভ্যাস অস্বাভাবিক হতে পারে। তাই,এগুলো থেকে সর্বদা আমাদের দূরে থাকা উচিত। আমাদের উচিত নয় মানুষকে শুধুমাত্র গবেষণার সামগ্রী হিসেবে গ্রহণ করা।
৬। একটি সুত্র পাওয়া যায় এগুলো নিয়ে যে, "যার অধিকার আছে কোন মহিলার সাথে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করার শুধুমাত্র তারই অধিকার আছে স্ত্রীর গর্ভকে ব্যস্ত রাখার"। আর কোন নারীর জন্য বৈধ নয় যে, সে অপর কোন নারীর সাথে দৈহিক সম্পর্ক রাখবে।

দ্বিতীয় পদ্ধতিঃ কোন মহিলার নিজের শরীর থেকে কোষ নিয়ে তারই গর্ভে প্রতিস্থাপন করে সন্তান উৎপাদনের সিস্টেমটা ও বৈধ হবে না।

দলীলঃ উপরের ২য় ও ৬ষ্ঠ নং ছাড়া বাকীগুলো এর দলীল হিসেবে পরিগণিত হবে।

তৃতীয় পদ্ধতিঃ স্বামী ব্যতিত অন্য পুরুষের শরীর থেকে কোষ নিয়ে মহিলার গর্ভে প্রতিস্থাপন করে সন্তান উৎপাদন এটাও বৈধ নয়। কেননা, এটা সরাসরি ব্যভিচার না হলেও ব্যভিচারের কাছাকাছি পর্যায়ের। এটা হলে সমাজে বংশের মিশ্রনের দ্বার খুলে দেয় ব্যভিচারের মত। কে কার সন্তান তা জানার কোন সুরত অবশিষ্ট থাকবে না। সন্তান হবে শুধুমাত্র বৈধ বৈবাহিক সম্পর্কের মাধ্যমে। এগুলো চিন্তা-গবেষণা করা ছাড়াই বুঝা যায়।

চতুর্থ পদ্ধতিঃ নিজের স্বামীর শরীর থেকে কোষ নিয়ে সন্তান উৎপাদন করার বৈধাবৈধের বিষয়টা চিন্তা-গবেষণার দাবী রাখে। কেননা, এখানে ব্যাপারটা ব্যভিচারের সাথে যুক্ত নয়।
ইসলামিক গবেষকগণ এই পদ্ধতির বৈধাবৈধের ব্যাপারটিকে আপাতত স্থগিত রেখেছেন বিজ্ঞানীদের গবেষণার ফলাফলের অপেক্ষায়। বিজ্ঞানীরা যদি গবেষণা করে ফলাফলে আসেন যে, উপরোক্ত সমস্ত প্রকার দোষ ত্রুটি থেকে সন্তান মুক্ত থাকবে তাহলে কয়েকটি শর্ত-সাপেক্ষে তা বৈধ হবে। শর্তগুলো হল-
১। সন্তানেরা দ্বিতীয় প্রজন্ম পর্যন্ত কোন ধরণের অস্বাভাবিক ক্ষতির সন্মুখিন হতে পারবে না। মায়েরাও তদ্রুপ ক্ষতির সন্মুখীন হবে না। মায়েদের ক্ষতির মধ্যকার একটা গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হচ্ছে বারবার গর্ভপাত ঘটানো। যেমনটা ঘটেছে প্রথম ক্লোনিং "ডলি"র ক্ষেত্রে বিজ্ঞানীরা ২৭০ বার ব্যর্থ পরীক্ষার পর সফল হয় বলে জানা যায়।
২। স্বামী হবে বন্ধ্যা। অন্য কোন প্রকারেই তার সন্তান হওয়া সম্ভব নয়।
৩। শুধুমাত্র একটি শিশুর ক্ষেত্রে ছাড় দেয়া যায়। কেননা, এটা জরুরী অবস্থার সাধারণ অনুমতি। জরুরী অবস্থার অনুমতি সর্বদা অব্যাহত থাকে না।এ শর্ত আরোপ করা হয়েছে এ কারণে যে, পিতার মত সন্তানও বন্ধ্যা হতে পারে। যদি তা না হয়(গবেষণার উপর নির্ভর করবে) তাহলে এ শর্ত প্রযোজ্য নয়।


তবে, কিছু কিছু ইসলামিক স্কলার এটাকে নিষেধ করে থাকেন। তাদের দলীল সমুহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল-

কিছু সংখ্যক জীব বিজ্ঞানীর মতে এ সিস্টেমে সন্তান হলে সে হবে উক্ত স্বামীর জমজ ভাই। কারণ, ৪৬ ক্রোমোজমের মধ্যকার ২৩ টি আসে স্বামী থেকে বাকী ২৩ টি স্ত্রী থেকে। কিন্তু, এ সিস্টেমে তা হচ্ছে না বরং স্বামীর শরীরের ৪৬ টি ক্রোমোজমই কপি হয়ে অনুলিপি হিসেবে এখানে এসেছে যা উক্ত স্বামীর পিতামাতা থেকে এসেছে। এখানে উল্লেখিত স্ত্রী লোকের (যার গর্ভে রাখা হবে) কোন ক্রোমোজম এখানে প্রভাব ফেলে নি। সুতরাং, শিশু উক্ত স্বামীর ছেলে হবে না বরং ভাই বিবেচিত হবে। সুতরাং, এ পদ্ধতিও বৈধ নয়। তবে, জমজ ভাই বিবেচিত হওয়া নিয়ে অনেকেই দ্বিমত পোষণ করেছেন কেননা, তারা দুজনে এক গর্ভ থেকে আসে নি। সুতরাং, জমজ হবে কিভাবে?

ক্লোনিংকে বিশ্ববাসী কিভাবে নিয়েছেঃ ১৯৯৮ সালের ২রা জানুয়ারী ইউরোপের ১৯ টি দেশ ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে আন্তর্জাতিক সন্মেলনে ক্লোনিং নিষিদ্ধের ব্যাপারে একমত হয়। তারা সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে, মৃত বা জীবিত কোন মানুষের ক্লোনিং করার যে কোন পদ্ধতি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষিত হল। তবে, বৃটেন ও জার্মানী এতে স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানায়। বৃটেনের বক্তব্য ছিল যে, এটা খুবই কঠোর আইন পক্ষান্তরে, জার্মানীর দাবি ছিল যে, এটা অত্যন্ত দুর্বল সিদ্ধান্ত।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট "বিল ক্লিংটন" ঘোষণা করেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন মানব ক্লোনিং এর গবেষণার জন্য কোন অর্থ ছাড় দেবে না। এবং বিজ্ঞানীদের থেকে এ অংগনে গবেষণা করাকে তিনি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন।
এ ছাড়াও ইতালি সরকার মানব ক্লোনিং বা যে কোন প্রাণির ক্লোনিং কে শাস্তি যোগ্য অপরাধ বলে ঘোষণা করে।
ফ্রান্স সরকার এ ধরণের গবেষনার চিন্তাও প্রত্যাখ্যানযোগ্য বলে জানিয়ে দেয়।


অন্যান্য প্রাণীর ক্লোনিং পদ্ধতিঃ অন্যান্য প্রাণী বা উদ্ভিদের ক্লোনিং এ কোন সমস্যা নেই। যদি তা মানুষের উপকারে আসে এবং আল্লাহর সৃষ্টিকে পরিবর্তন করে শুধুমাত্র খেল তামাশার কাজে ব্যবহৃত না হয়। কেননা, আল্লাহ তায়ালা পৃথিবীর সবকিছুকে মানুষের কল্যাণের জন্য তৈরী করেছেন। আল্লাহ বলেনঃ هو الذي خلق لكم ما في الأرض جميعاঅর্থাৎ, আল্লাহ তায়ালা দুনিয়ার সবকিছু তোমাদের কল্যাণের জন্য সৃষ্টি করেছেন (সুরা বাকারাঃ ২৯)
অন্যত্র আল্লাহ বলেনঃ وَسَخَّرَ لَكُمْ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ جَمِيعًا অর্থাৎ, আর তিনি আসমান ও জমীনের সবকিছুকে তোমাদের অনুগত করে দিয়েছেন। (সুরা জাছিয়াহঃ ১৩)